(পূর্বের অংশের পর)
– শ্রী অলোক ভট্টাচার্য
জল আছে বলে স্কুল ছুটি থাকতে পারে না, থাকবে পুজোর ছুটি। পৌঁছাবার একটিই উপায় ছিল – নৌকা। স্কুলের সামনের ম্যাথ তখন জলের নীচে। সেখানে অসংখ্য বিভিন্ন আকারের নৌকার মেলা। সেটিও আকর্ষণীয় ছিল। পাঠশালাটি (তখন পঞ্চম শ্রেণী পর্যতো প্রাথমিকে পড়তো) এই দুমাস বন্ধ থাকতো। বড় স্কুলটি খোলা থাকতো – উঁচু শ্রেণীর ছাত্ররাও সঙ্গে থাকত বলে। আমরা চার ভাইই এক দু বছর পাঠশালাতে পড়েছি। বড় স্কুলে একটি বাঁশের সাঁকো পেরোতে হতো। তাই একটু বড় হবার সুযোগ দেওয়া। দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষক কাঞ্জিলাল মাস্টারমশাই ছিলেন নির্দয়। মুখের চেয়ে হাত চলত বেশি। বোধহয় বিশ্বাস করতেন সব গাধাগুলিকে শুধু পিটিয়েই ঘোড়া বানাতে পারবেন। শুরুতেই তাঁর হাতে যাতে না পড়ি আমরা জ্যাঠামশাই এই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
মাঠ ডুবে আছে বলে কোরকদীতে ফুটবল খেলা বন্ধ ঢালতে পারে না। লাহিড়ীদের মেজ তরফের মণ্ডপ ও কাচারিদালানের মাঝে মস্ত বড় উঠোনটাই মাঠ। খেলোয়াড় সংখ্যা চার জন প্রতি দলে। মোজার মধ্যে পুরোনো ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো গুঁজে গোপলাকৃতি করে হতো বল। তার আবার টুর্নামেন্ট। দর্শকও হতো। বিজয়ী দল পেত শিল্ড। শিবদাস-বিজয়দাস ভাদুড়ীর গ্রামের সম্মান রাখতে হবে তো।
(ক্রমশঃ)
