Recent Post

এক নজরে

‘ইংরেজি টিংরেজি কিছু’ –

এ প্রসঙ্গে কথা আগেও বলেছি এবং আজও বলছি। ব্যাপারটা হলো যে, এরকম আগেও দেখেছি এবং এখনো দেখে যাচ্ছি (ইন ফ্যাক্ট ২০০২ সাল থেকে, অর্থাৎ আমার লেকচারশিপ যে বছর শুরু সে বছর থেকেই দেখছি যে, কারুর উচ্চারণ ঠিক করে দিলে সাধারণত দু ধরনের রেসপন্স পাওয়া যায়। প্রথম ধরণের রেসপন্সটা হল সেই ধরণের রেসপন্স যে ধরনের রেস

সম্পাদকীয়

নিঃসন্দেহে, গণতন্ত্র এক সুমধুর শব্দ। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ব্যক্তির নির্দিষ্ট অধিকার রহিয়াছে, নিজস্ব মনোভাব ব্যক্ত করার, অপরের সাথে কথা বলার ও প্রয়োজনে প্রতিবাদ করার। তাহার উপরে কোন বাধা নাই। এ সকল মধুর ও মহান বাক্য ভারতের সংবিধানে খোদিত রহিয়াছে সুগম্ভীর মর্যাদা সহকারে। যদিও তাহা আদৌ পালন করা সম্ভব কি না স্বাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীন চিত্তে তাহা এক বৃহৎ প্রশ্নচিহ্নর সম্মুখীন আজ; এবং প্রশ্নচিহ্নের কলেবর বৃদ্ধি পাইতেছে ক্রমশ। ‘৪৭ এ ইংরেজ (ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ নহে) ভারত হইতে নির্বাপিত হইলে তাহার চিরন্তন প্রজা ভারতবাসীর জন্য একটি উপহার দিয়া যান – Westminster Style of Democracy যা বর্তমানে সর্বজনশ্রেদ্ধেয় সংসদীয় গণতন্ত্র রূপে আখ্যাত হইয়াছে। তখন হইতেই ভারতের সমাজের প্রায় প্রত্যেক স্তরে গণতন্ত্রের নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা মাত্রাতিরিক্ত প্রকারে সংগঠিত হইয়াছে, ইহা সত্য। কিন্তু তাহা আজ ২০২৩ খৃষ্টাব্দে পৌঁছিয়া প্রত্যেক ভারতীয়ের চিত্তে কতখানি প্রভাব বিস্তার করিয়াছে সে প্রশ্নও উঠিয়া আসে। প্রশ্ন কেন? উত্তর একটিই – গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা, আইন-বিচার-ব্যবস্থার উপর যখন এক বিশেষ সম্প্রদায়ের আস্থা ক্রমশ কমিতেছে এবং তাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাতে অযোগ্যতা বা অসামর্থতা ক্রমশ স্পষ্ট হইতেছে তখন অবশ্যই প্রশ্ন করা যায় এই আইনের সমাহার কি শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জাতির সম্মুখে এক সাড়হীন সত্তার মতন যাহার উপস্থিতি হয়তো আছে কিন্তু প্রয়োগের স্থবিরতা এক তমসা সৃষ্টি করিয়াছে। …..

শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নহে, ভারতের প্রায় প্রতি রাজ্যেই সাম্প্রদায়িকতার এক অশনি সংকেত বৃদ্ধি পাইতেছে ক্রমশ। পশ্চিমবঙ্গে রাম নবমীর মিছিলে যে আক্রমণ হইল, মহারাষ্ট্রের নাসিকের ত্র্যম্বকেশ্বরে জ্যোতির্লিঙ্গে চাদর চড়াইবার উন্মাদনা হতে দিল্লিতে এক বালিকাকে অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতায় হত্যা করা এবং অন্যত্রও – সকলই এক ষড়যন্ত্রের নীল নকশার অন্তর্গত। সমস্যা হইল, হিন্দুর ক্ষীণদৃষ্টি, ঐতিহাসিক তথা বহির্বিশ্বের রাজনৈতিক তথা সামাজিক ঘূর্ণবায়ু সম্বন্ধে অমার্জনীয় অযোগ্যতা এই ষড়যন্ত্রকে দেখিতে অক্ষম। ভিন্ন ভাষা-ভাষী, ভিন্ন প্রদেশের হিন্দু এই সুবৃহৎ চক্রান্তকে নিজের মতো করিয়া দেখিতে চাহে এবং তাহাতেই বিপদের বৃদ্ধি হইতেছে ক্রমশ। হিন্দু কি এই সম্পর্কে সচেতন – তাহার ধর্মের ভিত্তি, উপাসনার মন্ত্র ও উপকরণ, দেব-দেবী এক ও অভিব্যাজ্য? তাহা যখন সম্ভব নহে তখন হিন্দুদ্বেষী ষড়যন্ত্রের তারতম্য হইবে কি প্রকারে?

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কি এই ক্রমবর্দ্ধমান বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়িতে সক্ষম? বিশেষত যখন মেধার পরিবর্তে শুধুমাত্র সংখ্যাই গণতন্ত্রের নিয়ন্তা?  কিন্তু এই ব্যবস্থা ‘৪৭র জুলাই মাসের শ্রীহট্টের গণভোটে ছিল না নচেৎ ওই স্থান আজ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হইয়া এক অন্য ইতিহাস সৃষ্টি করিতো। বর্তমানে, ভারতের ৬টি রাজ্যে, ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হিন্দু সংখ্যালঘু। সংবাদসূত্রে প্রকাশ, ওই সকল অঞ্চলের হিন্দুরা এই মূহুর্ত পর্যন্ত সংখ্যালঘুর তকমা বা ন্যূনতম কোন স্বীকৃত সাহায্য পান নাই। অমিত রক্তক্ষয়, অপূরণীয় ক্ষতি-সহ দেশভাগের মধ্য দিয়া ভারত স্বাধীন হইলেও স্বাধীন ভারতের শ্রদ্ধেয় সংবিধান নির্মাতারা এমন কোন সাংবিধানিক রক্ষাকবচের প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন  নাই যাহার দ্বারা জনসংখ্যাগত পরিবর্তন রোধ তথা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুর স্বার্থরক্ষা সম্ভব। যাহারই উপকারে আসুক ভারতের সংস্থাপিত গণতন্ত্র, হিন্দু যে তাহার স্বাদ পায় নাই তাহা বলা যায় অক্লেশে। এবং এটিও যে বিপর্যয়ের হিমশৈলের চূড়ামাত্র তাহাও বলি দৃঢ়তার সহিত। ….সম্ভবত, অবতারবাদে সদা আচ্ছন্ন হিন্দু ভারতবর্ষের গণতন্ত্রকে নব অবতার বা হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা সাব্যস্ত করিয়াছেন যাঁহার নেতৃত্বে তাঁহাদের সুমহান নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ অক্ষয় থাকিবে।………….ধর্মপ্রাণ হিন্দু (যত দ্রুত সম্ভব) তাহার অনন্ত নিদ্রা ভঙ্গ করিয়া হিসাব নিকাশে প্রবৃত্ত হন, এই কামনা করি।

বন্দেমাতরম।।