পুঁথি - পরিচয়

‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ –

শ্রী রবীন্দ্রনাথ দত্ত লিখিত ‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ বইটি নিয়েই এবারের পুঁথি পরিচয়। ২০০৭ সালের প্রিয়াংকা টোডি ও রিজওয়ানুর রহমানের সম্পর্ক এবং তার রেশ ধ’রে রিজওয়ানুরের মৃত্যু – এই প্রেক্ষিতেই রবীন্দ্রনাথ বাবু কলম ধরেছেন এবং এই ঘটনার আলোয় তুলে এনেছেন এমন কিছু তথ্য,ঘটনা, যার প্রতি মধ্যবিত্ত, সুশীল বাঙালী হিন্দু বরাবরই থেকেছে উদাসীন। ফলে একটা ঘটনা যে বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে সেই বাস্তবতার পথ ধ’রে সমাজ, ধর্ম এবং রাস্ট্রের ক্ষেত্রেও কিভাবে বিপুল এবং বিষাক্ত পরিবর্তন ধারা সূচিত হয়েছে,এই বই তারই এক প্রামাণ্য দলিল যেন।

সংবিধানে লিখিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটিকে, একদল মানুষ কর্তৃক দোষারোপ করা হয় যদিও,কিন্তু তার বহু পূর্ব থেকেই হিন্দুমানসে গ্রহণ করার যে সর্বব্যাপী প্রবণতা, সেই পথ ধ’রে এককালের আক্রমণকারীরা আজ হ’য়ে উঠেছে দেশের দখলদার। ভূমিপুত্রদের সঙ্গে প্রতিটি মূহুর্তে প্রতিটি ইঞ্চির হিসেব বুঝে পড়ে নেয় তারা। আর আন্তঃধর্ম বিবাহ যে এই বৃহৎ লক্ষ্যপুরণেরই আর একটি প্রক্রিয়ামাত্র, সে শিক্ষা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি সত্ত্বেও ভারতীয় হিন্দু তথা বাঙালী কখনও, কোনোভাবেই গ্রহণ করে নি। রবীন্দ্রনাথ বাবুর ন্যায় প্রাজ্ঞ, এবং ‘৪৬ এর নোয়াখালী থেকে বহু রক্তাক্ত রণাঙ্গন এর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ বারবার ব্রতী হন স্বদেশকে,স্বজনকে,স্বজাতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে,তাদের জাগরণনিদ্রা ভঙ্গ করতে, তাদের রক্ষা করতে। এই বইটিও সেই প্রয়াসেই লিখিত।

প্রথমে আসি বইতে উল্লিখিত তিন চারটি সমকালীন ঘটনায়:

১. শৈলেন্দ্র প্রসাদ নামের এক ব্যাক্তি বম্বেতে বিয়ে করেন মানেরা খাতুনকে ।ছেলে হবার পর স্ত্রী পুত্রকে দেখতে মুর্শিদাবাদে শ্বশুর বাড়ি আসে এবং পরিচয় গোপণ করে মুসলমান নাম ‘মুন্না শেখ’ বলে। দু তিনদিন থাকার পর মানেরার পরিবারের লোকেদের আচরণ দেখে সন্দেহ হয়, ফলত পাড়ার ছেলেদের ডেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় ও পাশের পাটক্ষেতে খুন করে।কাটা মাথা পাটক্ষেতে পুঁতে দেয়।

২.অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় রেহেনা সুলতানাকে বিয়ে করেছিল বারাসাতে।দুজনের বাড়ি থেকেই এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা আলাদা থতে শুরু করে।কিছুদিন পর রেহেনার বাপেরবড়ির লোকেরা জোর করে ছেলেসহ রেহেনাকে তুলে নিয়ে যায় ও আটকে রাখে।অর্ক স্ত্রী পুত্রকে আনতে যায়। দরজায় গিয়ে দাঁড়ানো মাত্র তার শালা এক ড্রাম কেরোসিন তার মাথায় ঢেলেই আগুন জ্বেলে দেয়। তীব্র আর্তনাদে জ্বলতে জ্বলতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

৩.কেশব মাহাতো চায়না বিবিকে বিয়ে করেছিল বোলপুরে। যথারীতি চায়না বিবির আত্মীয়দের হাতে প্রাণ দিতে হয় কেশবকে।

৪.চঞ্চল সাধুখাঁ লিয়াকত আলী শেখের মেয়েকে বিয়ে করেছিল। নদীয়া শান্তিপুর অঞ্চলের ঘটনা। একদিন মেয়ের বাড়ীর লোক বাড়ী চড়াও হলে চঞ্চল বাড়ী ছেড়ে পালায়। লিয়াকতের লোকেরা চঞ্চলের বাবাকে হাত্ব্র কাছে পেয়ে তাকেই খুন ক’রে যায়।

৫. জহরলাল নেহেরুর বোনকে অপহরণ করেছিল মতিলাল নেহরুর এক মুসলিম কর্মচারী সৈয়দ হাসান। পরে গান্ধীজির হস্তক্ষেপে বিজয়লক্ষ্মী উদ্ধার পান।

৬. সি পি আই নেতা ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত ইমতিয়াজ গণি হয়েছিলেন দাঁতের ডাক্তারের তালাকপ্রাপ্ত বিবি সুরাইয়া বেগমকে বিয়ে করতে – এ খবরই বা আজ কজন জানে..

৭.জউলফিকর আলি ভুট্টোর মৃত্যুর পর উলঙ্গ করে দেখা হয়েছিল সুন্নত হয়েছে কিনা কারণ একটাই, তাঁর মায়ের নাম ছিল লক্ষ্মীবাই।

ভারতবর্ষে থেকে নিজের সংস্কৃতি আঁকড়ে মাথা উঁচু ক’রে বাঁচতে গেলে এই তথ্যগুলো জানা বড় প্রয়োজন।

ভারতবর্ষে যে স্বল্পসংখ্যক লোক ইসলামী আগ্রাসন নিয়ে কাজ করেন, তাঁদের প্রায়শই একটি কথা বলতে শোনা যায়, ‘এদেশের মানুষ ইসলাম সম্বন্ধে জানেই না।

হুমায়ুন আজাদের লেখা থেকে জেহাদী ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষকদের বক্তৃতার যে উল্লেখ করেছেন, সেই বক্তৃতায় স্পষ্ট ক’রে,সরবে সদর্পে শেখানো হয়েছে কিভাবে একটি পুংলিঙ্গ এবং একটি এম ১৬ পিস্তল সমার্থক হ’য়ে যায়, এবং শুধু থিয়োরিই নয়, নিকটস্থ হিন্দু পরিবারে গিয়ে ছাত্রদের দিয়ে তার হাতেকলমে পরীক্ষা,তারপর নারকীয় উল্লাসশেষে বাড়ীর মহিলা পুরুষদের গাছে ডালে ঝুলন্ত দেহ দেখে দ্বিগুণ উল্লাসে বেরিয়ে আসা।

চিতোর রাণী পদ্মিণী থেকে নাটোর রাণী ভবানী হ’য়ে এ যেন এক ক্রমবর্ধমান ইতিহাস। আবার পক্ষান্তরে এক উজবেক গণিকার ঘটনা উল্লেখে লেখক জানান যে রাশিয়ায় তাঁর বন্ধু সেই গণিকার কাছে গেলে সে সুন্নত হয়েছে কি না আগে দেখতে চায়, এবং হয় নি দেখে খরিদ্দারকে প্রত্যাখ্যান করে।

মুসলিম সমাজে মেয়েদের সঙ্গে কি নারকীয় ঘটনা ঘ’টে চলে এবং নারী সংক্রান্ত ব্যাপারে পরিবারের মধ্যেই কি নিকৃষ্ট মনুষ্যেতর ঘটনা নিয়মিত ঘ’টে চলে তা এ বই না পড়লে অবিশ্বাস্য থেকে যেত। আচ্ছালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ বরকাতু – আল্লার তরফে শান্তি আপনার ওপর বর্ষিত হোক। কিন্তু সমাবেশে অন্য ধর্মাবলম্বীরা আছে বুঝলে বলতে হয়, ‘ আচ্ছালামুয়ালাইকুম ইয়া মানিত্তা বালহুদা।

অর্থাৎ আল্লার তরফে শান্তি শুধুমাত্র মুসলমানদের ওপরেই বর্ষিত হোক।

আমরা জানি না যে হিন্দুদের মৃতদেহ রাস্তা দিয়ে গেলে মুসলমানেরা একটি বাক্য আওড়ায়।সেটি হল, -‘ফিনারে জাহান্নমে খালেদুন’- যার অর্থ হল, ‘কাফির,বিধর্মী,তুমি জাহন্নমের আগুনে পুড়ে শেষ হও। অথচ মুসলমানের মৃতদেহ গেলে, তারা বলে ‘ইন্না লিল্লাহে ওয়াইনা ইলাহেরাজেউন’ – অর্থাৎ এই মুসলমানের দেহ যেন চিরশান্তিতে, চিরনিদ্রায় কবরে শায়িত থাকে।

কলেবরে অতীব ক্ষীণ এই বইয়ের তথ্যপ্রাচুর্য্য কখনোই ক্লান্ত করে না, বরং উদ্দীপ্ত করে,সতর্ক করে,সাবধান করে। চাকমাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের পর্ব যেমন শিরদাঁড়ায় হিমস্রোত ভ’রে দেয়, তেমনি ইসলামী নারীদের ওপরেও ইসলামী সমাজ কর্তৃক হওয়া অত্যাচারও ভারাক্রান্ত করে বৈ কি।

উইল ডুরান্ট থেকে রবীন্দ্রনাথ, বিবিধ উদ্ধৃতি আমাদের পুরো বিষয়ের উপলব্ধিতে একান্ত সহায়ক হ’য়ে ওঠে।

শুরুতেই নুসরাত জাহান ও লায়লা আঞ্জুমান্দ এর লেখা এ বইয়ের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা আরও অনেক বাড়িয়ে তোলে।