– শ্রী শশধর ভট্টাচার্য
সারারাত ঢাকা থাকে কুয়াশার জালে
শিশু রোদ চুপি চুপি হঠাৎ কখন,
নেমে এসে আধফোটা ঘুমন্ত সকালে
সোনা রঙে ভোরে দেয় মহুয়ার বন।
উশ্রীর বালু চর অভ্ররেণু মাখা।
কচি রোদ তারি বুকে মেলে দিয়ে পাখা –
জ্বলে ওঠে ঠিক যেন হাঁসুলির হার।
সাক্ষী তার থাকে শুধু দূরের পাহাড়।
এপারে সহর, জন, সকলে ঘুমায়।
মুকুতার মত জ্বলে রাতের শিশির;
ওপারে দেহাতী মেয়ে মহুয়া কুড়ায়,
সুরে সুরে কথা কয় বোনের তিতির।
আবছা ভোরের রঙ যত যায় ছিড়ে
আমলকি, শাল আর মহুয়ার বন –
গাঢ় রঙ মুঠো মুঠো কেবল আবীরে,
খেলা করে খাণ্ডুলি পাহাড়ে তখন।
চায়ের টেবিলে বসে সবাই তখন
অন্য এক ছবি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে;
আসল ছবিটা গেছে মুছিয়া কখন
গাঢ় রঙে পৃথিবীটা অন্য কিছু লেখে।
যে কটা পাখির গান শুনি এসময়,
মহুয়া বনের তারা কেউ পাখি নয়।
নাম ধরে ডাকি তবু কিছু নাহি বুঝি
মুছে যাওয়া ছবিটারে অযথাই খুঁজি।
(প্রথম প্রকাশ – হিন্দু – ৫ই পৌষ, ১৩৭০)
Comment here
You must be logged in to post a comment.