আমার ইতিহাসস্বভূমি ও সমকাল

বজ্র যায়নি ক্ষয়ে

— শ্রী পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়

 

নব্য স্বাধীন এ বাংলাদেশ বিরোধীশূন্য ক’রে
“এক লহমায় ক্ষমতাচ্যুত ” — আহ্লাদে বাজি পোড়ে …
বাজি নয়, জ্বলে বিপন্ন শত সংখ্যালঘুর চিতা
ওরা তো কাফের, মালাউন ওরা, নেই সহমর্মিতা ৷
নারকীয় তাণ্ডবের স্রষ্টা রাজাকার তোলে ফণা
স্বজন হারানো কান্না বাতাসে, দুঃসহ যন্ত্রণা !
সহিংস উৎপীড়নের খেলা জামাতি স্বৈরাচারে
ছারখার হলো হিন্দুর ভিটে — হিংস্র অন্ধকারে ৷
হে প্রবল কালো সূর্যের দিন, দিলে শুধু পোড়া ছাই
সাতচল্লিশ, একাত্তরকে বারেবারে হাতড়াই …
সে রক্তাক্ত করুণ রাত্রি, বিপন্ন দিনগুলি
কেন নিয়ে আসে উন্মাদ স্মৃতি ! প্রপিতামহের খুলি,
কিশোরী মায়ের খুবলিয়ে খাওয়া ছিন্ন মাংস থেকে
কিলবিল করা অজস্র পোকা, সেই ছবি দেখেছে কে?
ঘরে অশক্ত পঙ্গু পিতা ও ধর্ষিতা পিতামহী —
লুকিয়ে অশ্রু ফেলে যান আজও, আমি আজ বিদ্রোহী !
জেগে উঠি এই রণক্ষেত্রে, এসো হে পরশুরাম
রক্তে আমার কুঠারের জ্বালা, অগ্নি অবিশ্রাম ৷
কাদের জন্য এ বাংলাদেশ ? এ কীসের স্বাধীনতা ?
পিশাচরাত্রি, জিহাদযুদ্ধে ঘৃণিত বর্বরতা !
দার-উল-ইসলামের রাজ্যে আসন্ন তার পালা
বিচার চাইলে হাতকড়া, দাও জিহাদীর পায়ে মালা ৷
তুমি তা পারো না? তাহলে সংঘশক্তিতে এক হয়ে
জেগে ওঠো, দ্যাখো দধীচির হাড়ে বজ্র যায়নি ক্ষয়ে ৷

 

 

(লেখক পরিচিতি – মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক। জাতীয়তাবাদী কবি ও প্রাবন্ধিক। প্রকাশিত গ্রন্থ : রাত বারোটার সূর্য (কাব্যগ্রন্থ), প্রকাশ্য আড়াল ( কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ ), লিমেরিক ৫০ (ননসেন্স ভার্স), এবং ‘বাঙালি হিন্দুর ধূসর ভবিষ্যৎ’ (নিবন্ধগ্রন্থ)।)

 

Comment here