আঙিনা

‘ইংরেজি টিংরেজি কিছু’ –

এই কিস্তির প্রথমেই বলি, proper noun এর ক্ষেত্রে নিয়মটা হল সেটিকে যতটা সম্ভব সেভাবেই উচ্চারণ করা, যেভাবে সেটি তার নিজের জায়গায় উচ্চারিত হয়। আমাদের রাজ্যের একটি সংবাদ ও প্রকাশনা গোষ্ঠী মাঝেমধ্যেই নিজেদের খেয়াল খুশি মতো মানুষের নামের বাংলা বানান ঠিক করে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে দেখেছেন! যেমন ধরুন, একটি অবাঙালি নারীর নাম সৌম্যিয়া। উল্লিখিত কাগজটি সেটাকে ছাপবে “সৌম্য”। জয়াসুরিয়াকে লিখবে ” জয়সূর্য”, মানেকাকে বানাবে “মেনকা”, ইত্যাদি ইত্যাদি। ওটা কিন্তু ঠিক নয়। হ্যাঁ, সূরিয়া সূর্যই। কিন্তু উচ্চারণের পার্থক্যটাকে আপনার স্বীকৃতি দিতেই হবে।

বিখ্যাত তাত্ত্বিক Michel Foucault এর নাম ত নিশ্চয়ই শুনেছেন! উচ্চারণ মিচেল ফুকল্ট নয় কিন্তু। এমনকি ইংরেজরাও নামটাকে ফরাসী কায়দায় মিশেল ফুকোই উচ্চারণ করে। তেমনই, Jacques Derrida উচ্চারণ জাক (ঠিক যেই জ’টা এখানে প্রয়োজন বাংলা ভাষায় সেটা নেই) দেরিদা। জাকুইস দেরিদা নয় কিন্তু। একইভাবে, Jacques Lacan হলেন জাক ল্যাকঁ। জাক লাকান নন উনি। এভাবে Sigmund Freud হলেন জিগমুন্ড ফয়েড, Jean-Paul Sartre হলেন জঁ (এই জ বাংলায় নেই আগেই বলেছি) পল সাত্রা। C. G. Jung হলেন সি. জি. ইয়াং। না, জাং ত ননই, ইয়ুংও নন।

যাক proper noun ত বেশ ক’টা হল। এবার চলুন একটু grammar নিয়ে নাড়াচাড়া করি। তবে সেটার আগে সামান্য গৌরচন্দ্রিকার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।

২০০২ থেকে প্রযুক্তিবিদ্যার ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি পড়িয়ে চলেছি কাজেই এব্যাপারে মনে হয় নিজের অভিজ্ঞতাগুলোকে আমার মূল্যবান না ভাবার কোনো কারণ নেই। তা এরকমই একটা অভিজ্ঞতা হল যে, ইংরেজি মিডিয়ম বাংলা মিডিয়ম নির্বিশেষে অনেকেরই ধারণা grammaticality correct ইংরেজি বলা এবং লেখা হল আভিজাত্য। কাজ চালানোর জন্য যে ইংরেজি তাতে grammar না থাকলেও চলে। অর্থাৎ এদের মাথায় ঢুকে গেছে যে, grammar is a luxury and grammatical correctness is status symbol and not a necessity. এই মারাত্মক ভুল ধারণার পেছনে দুই ক্ষেত্রে দু-ধরনের কারণ কাজ করে।

সাধারণতঃ বাংলা (বা অন্য যেকোনো আঞ্চলিক ভাষার) মাধ্যমের শিক্ষকেরা সবসময় সোজাসুজি না বললেও নানা ভাবে বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন যে, ইংরেজি লিখতে এবং বলতে হলে (ইচ্ছে করে বলার আগে লেখাকে রাখলাম তার কারণ এসব স্কুলে ইংরেজি বলতে শেখাকে গুরুত্ব অনেকেই কম দেয়া হয়। এমনকি দেয়া হয় না বললেই চলে।) আগে grammar টা খুব ভালো করে শিখে নিতে হয়। এর ফলে বিশেষ করে ইংরেজি বলার প্রতি ব্যক্তির মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কখনও ভীতিজনিত অনীহা এবং কখনও আলস্যজনিত অনীহা তৈরী হয়।

আবার, ইংরেজি মাধ্যমের পাঠ্যক্রম প্রণেতারা এবং শিক্ষক শিক্ষিকারা মনে করে থাকেন যে, মাধ্যমটাই যেহেতু ইংরেজি, অর্থাৎ প্রতিটি বিষয়ই যেহেতু ইংরেজিতে পড়ানো হয়, সেহেতু আলাদা করে grammar পড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এর ফলে যেসব ছেলে মেয়েদেরকে বাড়িতে বড়দের উদ্যোগে grammar পড়ানো হয় তাদের ইংরেজি grammatically শুদ্ধ হয়েই গড়ে উঠলেও, যারা পুরোপুরি স্কুলের পড়ার ওপরেই নির্ভরশীল, তাদের ইংরেজি প্রায়শই অত্যন্ত বাজে হয়ে তৈরী হয়।

ভুলটা কোথায় বলুন ত! প্রথমে বাংলা মাধ্যমের দিকে তাকাই। এখানকার শিক্ষক শিক্ষিকারা ভুলেই যান যে, পৃথিবীতে প্রথমে ভাষা এসেছে, ব্যাকরণ নয় (যেমন সঙ্গীত প্রথমে এসেছে, স্বরলিপি নয়)। ভাষা তৈরী হওয়ার বহু পরে মানুষ যখন বুঝতে শিখল যে, ভাষাতে একটা system impose না করলে communication smooth এবং unambiguous হচ্ছে না, তখন সে আবিষ্কার (invention, discovery নয়) করল ব্যাকরণ নামক শাস্ত্র। তাহলে ভাষা ব্যবহার করা শুরু করলে (oral এবং written দুই-ই) তবে না grammar এর প্রয়োজন একজন শিক্ষার্থী উপলব্ধি করবে! আমি আগে ভালো করে grammar শিখে নিই, তারপর ইংরেজি বলবার চেষ্টা করব এর’মটা ভাবলে এ-জীবনে আর ইংরেজি বলা হবে না। ইংরেজি মাধ্যমের সমস্যাগুলো সামনের দিন আলোচনা করব। আপনি এখন কাঞ্জিকের বাকিটা পড়ে ফেলুন।

(ক্রমশঃ)

Comment here