শাশ্বত সনাতন

কিন্নৌর কৈলাশ॥ এক অধুরী কাহানী – ভ্রমণ কাহিনী – ৪

(পূর্বের অংশের পর)

– শ্রী সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

 

০৪/০৭/২০১৫

আমার পৌনে ৪টে ঘুম ভেঙ্গে গেল, উঠে ছোট প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি চাঁদ তার আলোয় মা বসুধাকে উদ্ভাসিত করছে।আর পাশ দিয়ে অবিরাম গর্জনে বয়ে চলা শতদ্রু যেন টাংলিং নদীকে সংগমের জন্য আহ্বান করে চলেছে।আসলে টাংলিং বা পুহারীগ্রামটা হল উভয় নদীর সংগম স্থল। অতঃপর একটু ঈশ্বরের নাম নিয়ে প্রকৃতির পূর্ণ ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে এসে দেখি সিধু আর ছবিলাল উঠে পরেছে। আমি সেই ফনাকে আপডেটটা সেরে রাখলাম।আমি মোহিত হ’লাম প্রকৃতির এই মোহময়ী রুপ দেখে, মুগ্ধ হ’লাম। ১. টাংলিং ২. সংগম..ঐ দূরে শতদ্রু ৩. সংগমের ধারে ওপরে ঐ সবুজ বাড়ীটা হ’ল দিদির চায়ের দোকান। প্রায় ৯কিমি চড়েছি ৭ ঘন্টায়। ৭টায় শুরু হয়েছিল যাত্রা, প্রায় ৭০° খাড়া চড়াই। আমাদের গন্তব্য আশিকিধার ওখানেই রাত্রিযাপন।কেউ এখানে ট্রেক না করে ভাবতেই পারবেনা ট্রেকিং রুটটা কতটা রাফ অ্যাণ্ড টাফ। থাংলিং থেকে যাত্রা শুরু করে আমরা প্রায় ৭টার সময় পৌঁছলাম আশিকিধার, যেখানে বনদপ্তরের একটা ঘর আছে। সেখানেই রাত কাটালাম। পাহাড়ী লোকেরা যে পথ অতিক্রম করতে ৪-৫ঘন্টা নেয় সেই পথ আমাদের অতিক্রম করতে লাগল ১২ ঘন্টা। তাহলে ব্যাপারটা বোঝ…পাহাড়ের চড়াই প্রায় ৭০-৮০°, আমরা ১০পা যাই তো ২ মিনিট দাঁড়াচ্ছি।ফলে আমাদের সময় বেশী লেগেছে। যাইহোক, রাত্রে ওখানে পৌঁছানোর পর ছবিলাল খিচুরী বানালো, আমরা একটু খেলাম, ঠাণ্ডায় শরীর প্রায় জমে যাচ্ছিল। একটা কথা বলতে হয় ওখানে জলের কষ্ট মারাত্মক। আমরা নিচের একটা ঝর্না থেকে জল নিয়ে এসেছিলাম ৫ লিটার সেই জল শেষ। আবার আশিকিধারে এসে প্রায় ১কিমি হেঁটে গিয়ে আর একটা ঝর্নার থেকে জল নিয়ে আসলাম।রাত্রে যেযার ম্যাট পেতে স্লিপিং ব্যাগে শুয়ে পরলাম, এক ঘুমে ভোর।

 

(লেখক পরিচিতি – বিশিষ্ট জ্যোতিষী; একাগ্র পান্থ)

 

(ক্রমশঃ)

Comment here