-মিলন খামারিয়া
খড়দহ,২৪/০৪/২১ তারিখ,শনিবারঃ ভোটাধিকার প্রয়োগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার প্রয়োগ করেই মানুষ তার সরকার নির্বাচন করে থাকেন। সারা ভারত বর্ষে ভোট উৎসবের সঙ্গে পালিত হলেও পশ্চিমবঙ্গের কথা আলাদা। শাসক দলে যারা থাকেন তাদের রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর অত্যাচার করা,মেরে ফেলা,বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা – এটাই যেন পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যে রূপান্তরিত হয়েছে।কংগ্রেস শাসন,বামেদের শাসন,তৃণমূলের শাসনে যে সে অবস্থার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গের খড়দহ বিধানসভার নির্বাচন।এখানে তৃণমূলের কাজল সিনহার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত।সংস্কৃতিবান খড়দহের মানুষ কাজল সিনহার মতো গুন্ডাদের পছন্দের তালিকায় থাকবেন না এটা বুঝেই তৃণমূলের বাহুবলী প্রার্থী কাজল সিনহার আদেশে সমস্ত বিধানসভা জুড়েই চললো বিজেপির কার্যকর্তাদের উপর আক্রমণ।
খড়দহ বিধানসভার ২২/০৪/২১ তারিখের নির্বাচনে বহু মানুষের আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যায়।যার মধ্যে অন্যতম KNSD সাংগঠনিক জেলার কার্যকর্তা সুপ্রিয় বিশ্বাস ও তার দাদা সুব্রত বিশ্বাস,অনুপ ঘোষ,শুভজীৎ ঘোষ,অশোক ঘোষ, দিব্যেন্দু বোস ও আরও অনেক কার্যকর্তাদের আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যায়। এদিন হালদার বাগান ৬৯ নং বুথ ক্যাম্পে দুপুর ২ টোর দিকে হামলা চালায় কিছু তৃনমূল আশ্রিত দুষ্কৃতি। তারা বন্দুকের বাঁট দিয়ে সুপ্রিয় বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করে। তারপর পাশে কনস্ট্রাকশানের জন্য পড়ে থাকা কাঠ দিয়ে পিঠে বাড়ি মারে। সুপ্রিয় বাবুকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর দাদাও গুরুতরভাবে আহত হন।অন্যান্য কার্যকর্তাবৃন্দও কমবেশি আহত হন।ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই রহড়া থানার পুলিশ সেখানে আসে। তারপর সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে বন্দীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া এদিন কল্যাণনগর হাই স্কুলের ৭৭,৭৮,৭৯ বুথের সামনে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিজেপির কার্যকর্তাদের উপর হামলা চালায় কাজল সিনহার মদতপুষ্ট শুভ ধর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা পিন্টু পাল নামে এক কার্যকর্তাকে বন্দুকের বাঁট ও লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে চলে যায়। পাশের দোকানের লোকেরা অচৈতন্য অবস্থায় তাকে বি.এন.বোস হাসপাতালে নিয়ে যান।তার মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে। তিনি আমাদের জানান যে,-“কাজল সিনহার গুন্ডারা আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল,পাশের দোকানের লোকেরা ছুটে না এলে আজ আমাকে মেরেই ফেলতো ওরা।”
সেইসাথে খড়দহ বিধানসভার মন্ডল-১ এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিভূতিনাথ ব্যানার্জি ও তার ভাই বিষ্ণুনাথ ব্যানার্জির উপরেও তৃণমূলের সংখ্যালঘু(মুসলিম) সম্প্রদায়ের লোকেরা হামলা চালায়। তিনি মুখে ও পিঠে আঘাত পান বলে জানা যায়।
সমস্ত ঘটনার তথ্যই খড়দহ ও রহড়া থানার পুলিশের বড়বাবুকে জানানো হয়। তারা দুষ্কৃতিদের অনুসন্ধান শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাউকেই এরেস্ট করতে পারেননি।
গণতান্ত্রিক দেশের একটি রাজ্যে নির্বাচনের এই চিত্রই বলে দেয়,রাজ্যের কোনো আইনের শাসন নেই।গুন্ডাদের স্বর্গরাজ্য হয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ।এদিন বিজেপির প্রার্থী শীলভদ্র দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে,-” কাজল সিনহা বুঝে গেছে যে,নির্বাচনে তিনি হারছেন,তাই মানুষকে ভয় দেখিয়ে দমন করতে চাইছেন। কিন্তু খড়দহের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এই গুন্ডারাজ শেষ করার পক্ষেই জনাদেশ দিয়েছেন আশাকরি। আগামীদিনে খড়দহের দুষ্কৃতিদের যথাযথ শাস্তি যাতে হয়,তার জন্য আমি চেষ্টা করবো।”
সত্যিই যেন রাজ্যজুড়ে এই গুন্ডারাজ শেষ হয়,এটাই আমাদের চাওয়া। সাধারণ মানুষ এই রাজনৈতিক হিংসার শিকার যেন আর না হন।নতুন সরকারের কাছে এটাই হোক আমাদের দাবি।
Comment here