আঙিনা

লৌকিক বাংলার লুপ্ত প্রবাদ –

মাছি মারা কেরানী

 

জনৈক কেরানী একখানা খাতার নকল করছিল। 

যে খাতা দেখে নকল করছিল সেই খাতার এক জায়গায় একটা মাছি মরে ছিল।ওই খাতা লেখার সময় হয়তো তাতে একটা মাছি বসেছিল পরে পাতা উল্টাবার সময় মাছিটি মরে সেখানেই রয়ে গেছে।কিন্তু কেরানি ভাবল, ওই খাতাতে যা আছে তা এই খাতাতেও থাকা উচিত এই ভেবে সে একটা মাছি মেরে নিজের খাতার যথাস্থানে রেখে দিয়েছিল।

– ০০০-

ভালো মন্দ কিছু বিবেচনা না করে যা দেখে অবিকল তাই নকল করে এরূপ ব্যক্তিকে মাছি মারা কেরানী বলে

 

‘ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ’

এক সময় কতকগুলো ভুত মিলে ঠিক করলো যে মানুষেরা বাপের শ্রাদ্ধ করে, সুতরাং আমরাও করব।এরূপ ঠিক করে তারা এক মাঠে শ্রাদ্ধের আয়োজন করল। শ্রাদ্ধ করতে পুরোহিতের দরকার, জনৈক ভট্টাচার্য সেই মাঠ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ভূতেরা গিয়ে তাকে পৌরহিত্য করতে ধরল। ব্রাহ্মণ ভয়ে অস্থির ;শেষে সাহসে ভর করে ভূতেদের সঙ্গে শ্রাদ্ধের জায়গায় এলেন, এবং কিভাবে এদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তাই চিন্তা করতে লাগলেন।

ভূতেরা শ্রাদ্ধের সব আয়োজন উপস্থিত করলে ব্রাহ্মণ বললেন, এখন তোমাদের মধ্যে কার বাপের শ্রাদ্ধ হবে বল।

ভূতেরা সবাই বলতে লাগলো “আমার বাপের শ্রাদ্ধ, আমার বাপের শ্রাদ্ধ “।ব্রাহ্মণ তাদের সবাইকে শান্ত করে বললেন, ‘একেবারে তো সকলের বাপের শ্রাদ্ধ হতে পারে না তোমাদের মধ্যে যে প্রধান আর তার বাপেরই শ্রাদ্ধ হতে পারে’।
তখন সবাই মিলে ‘আমিই প্রধান,আমিই প্রধান’ বলে চিৎকার করতে লাগলো।

ক্রমে সে চিৎকার মারামারিতে পরিণত হলো। এক্ষণে প্রকৃত ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ হতে লাগলো। ব্রাহ্মণ সেই অবকাশে উর্ধ্বশ্বাসে ছুট দিলেন।

-০০০-

অনেকে কোন কাজই প্রবৃত্ত হলে এবং সেই কাজে সকলেই কর্তা হলে কাজে বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হয়।

Comment here