১।’ খর্ব খর্ব মাথা কেশ।
লক্ষণ বলে সে বিশেষ’
যে পুরুষের মাথার চুল ছোট ছোট আর স্বল্প পরিমাণে থাকে,তারা খুব বিচক্ষণ, বুদ্ধিসম্পন্ন এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়।
২।’বুকের মাঝে যাহার খাল
তাহার অতি লক্ষ্মণ ভাল’
যে পুরুষের বুকের মাঝে খাঁজ থাকে,সে পুরুষ খুব ভাল আর ধার্মিক প্রকৃতির হয়
৩।’ঘোল,কুল,কলা
তিনে নাশ গলা’
গলার সমস্যায় ঘোল,কুল আর কলা – এই তিনটি জিনিষ এড়িয়ে যাওয়া উচিত
৪।’মেয়ে নষ্ট ঘাটে,
ছেলে নষ্ট হাটে’
আগেকার দিনে মেয়েদের একমাত্র পুকুরঘাট ছাড়া আর বাড়ির বাইরে খুব একটা যাবার উপায় ছিল না। তাই যদি কোনো কুসঙ্গের সম্ভাবনা আসত,সেটা ঘাট থেকেই।
আর একইরকমভাবে ছেলেদের যেহেতু হাটে,মাঠে বাটে – সর্বত্রই ছিল অবাধ গতিবিধি, তাই তাদেরও বদসঙ্গ সেখান থেকেই আসার সুযোগ।
৫.’পৌষে গরমী,বৈশাখে জাড়া
প্রথম আষাঢ়ে ভরবে গাড়া’
যে বছর পৌষমাসে গরম এবং বৈশাখ অপেক্ষাকৃত শীতল থাকে,সে বছর প্রথম আষাঢ়ে বৃষ্টি আর শ্রাবণে অনাবৃষ্টি হয়।
৬।’ফাগুনে আগুন চৈতে মাটি
বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি
বাঁশ ছেড়ে বাঁশের পিতামহকে কাটি’
ফাল্গুন মাসে বাঁশের গোড়ায় আগুন দিয়ে পাতা পুড়িয়ে দিতে হয়,কারণ তাতে পাতা পোড়া ছাই ভাল সারের কাজ করে। এরপর চৈত্র মাসে বাঁশের গোড়ায় মাটি দিলে বাঁশের বৃদ্ধি খুব ভাল হয়।
আর, বাঁশ কাটার সময়ে নতুন বা ক’চি বাঁশ ছেড়ে ঝুনো,পাকা বাঁশ কাটা উচিত
৭।’ধানের গাছে শামুক পা
বনবিড়ালী করে রা
গাছে গাছে আগুন জ্বলে
বৃষ্টি হবে খনায় বলে’
যদি শামুক ধানগাছ বেয়ে ওপরে উঠছে দেখা যায়,বনবিড়ালী উচ্চস্বরে ডাকতে থাকে,গাছে গাছ্র অসংখ্য খদ্যোত অর্থাৎ জোনাকি দেখা যায়, তিবে খনার বচন অনুযায়ী বৃষ্টি হবে ধ’রে নেওয়া যায়।
৮।’ইঁদুর চেনে না ভাগবত পুঁথি’
অর্থাৎ অজ্ঞ যে সর্বত্রই অনিষ্ট ক’রে বেড়ায়।
৯।’পিঁড়েয় ব’সে পেঁড়োর খবর’
নগণ্য লোকের গুরুত্বপূর্ণ খবর রাখা।
১০। ‘সাদা মেঘে গলা পানি
কালো মেঘে ছাগল দৌড়ানী’
সাদা মেঘে ভারী বর্ষণ হয়,কিন্তু কালো মেঘে থেকে থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বৃষ্টি আসে।স্থায়ী হয় না।
১১।’যেখানে গৃহস্থের বাসা,
সেখানে অতিথির আশা’
অর্থাৎ, সু গৃহস্থের বাস যেখানে থাকে,সেখানে অতিথিরাও আতিথ্যের আশা করে।
১২।’যেখানেতে নাই মান,
সেখানে ছাড়ি পাকা ধান’
যেখানে সম্মান নাই,সেখানে অধিক লাভের আশা থাকলেও,সে স্থান ত্যাগ করাই উচিত।
গৃহবধূ। কৃষিভিত্তিক জীবনে লেখালেখি তাঁর দিনযাপনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী।
গ্রামবাংলার হারিয়ে যেতে বসা সহস্রাধিক প্রবাদের সযতন সংগ্রাহক।
Comment here