সাদাকালো রঙমাখা

অবুঝে সবুজে ফেরা –

– শ্রীমতী বিশাখা দাশগুপ্ত

 

সুকুমার রায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনে তিনি যা সৃষ্টি করে গেছেন তার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পাগলা দাশু।

এই চরিত্রটা পড়তে গিয়ে মনে হয় যেন আমাদের অনেকের মধ্যেই একটা পাগলা দাশু চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে। সুযোগ পেলেই সে দেখা দেবে।

দাশু একটু অন্য রকম… তার এত্ত বড়ো মাথা, তাতে এলোমেলো ঝাঁকড়া চুল, কুলোর মতো কান, বড়ো বড়ো গোল গোল চোখ… খুব সহজেই সে নজর কাড়ে এবং তার মাথায় হাজার রকম দুষ্টু বুদ্ধি। দাশুকে স্কুলের সব্বাই চেনে তার উদ্ভট কার্যকলাপের জন্যে। সে ক্লাসে চিনেপটকা ফাটায় আবার মাষ্টারমশাই এর কাছে স্বীকার ও করে। নিজেকে সে জ্যান্ত কাকতাড়ুয়া বলে।

“পাগলা দাশু” বলি কিন্তু সেটা পাগলা বলতে তার মধ্যে ইনোভেটিভ চিন্তা ভাবনা গুলোই আমরা খুঁজে পাই।সে দুষ্টু কিন্তু সে খুব ইন্টেলিজেন্ট।

এই সময়কার বাচ্চাদের মধ্যেও নিশ্চই পাগলা দাশু আছে, এখনকার পড়াশোনার চাপে হয়তো সেটা প্রকাশ হতে পারে না। কিছু ছোট বাচ্চা তো আছে যারা মাটি ঘাটে, রাস্তার কুকুর ছানা কে কোলে করে আদর করে, গাছ লাগানোর চেষ্টা করে, আবার সে হয়তো খাতার পাতা ছিঁড়ে ফেলে সেই কাগজ আর আঠা দিয়ে নতুন কিছু বানাতে চায়।

করুক না দুষ্টুমি গুলো, করুক না খাতার পাতা ছিঁড়ে কুচি কুচি। শেখাবো ওদের … খাতার পাতা ছিঁড়ে গেলে নৌকো বানানো যায়, জলে সেটা ভাসানো যায়।

পাগলা দাশু ত সবার অ্যাটেনশন চাইতো। বাচ্চারা চায় সবার নজর তার দিকে থাকুক। তাদের তো কৌতূহলের শেষ থাকেনা। জানতে চায় অনেক কিছু, তাদের আয়ত্তের বাইরের।

সেটা যদি মোবাইল বা ভিডিও গেমসের বাইরে হয়ে তাহলে অসুবিধে কি, নানা রকম পাখি,পশু অথবা বাগানের কীট পতঙ্গ ধরুক, শিখুক। নিজেদের মতো বাঁচতে শিখুক পরিবেশ থেকে। 

দাশুর দুষ্টুমি গুলো স্কুলের দমবন্ধ ভাব টা কাটিয়ে দেয়।সবসময় কারো কে জব্দ করবার তালে থাকে সে। দাশু নিজেকে নিয়ে হাসতে জানে, মজা করতে জানে। …সুকুমার রায়ের দাশুর তখনকার খেলনার সরঞ্জামের সাথে সাথে অভিভাবক এবং ছোট্টো দাশুরাও এখন অনেক পাল্টে গেছে। তবে স্কুলের আনন্দ গুলো কিন্তু কমে যায়নি।

 

Comment here