বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্পের ধারায় যারা বিভূতিভূষণ, বনফুল,পরশুরাম,শরদিন্দু,সুবোধ ঘোষ,মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়,আশাপূর্ণা দেবী,শিবরাম,মনোজ বসু,প্রেমেন্দ্র মিত্র,বুদ্ধদেব বসু,প্রতিভা বসু প্রমুখের সাহিত্যকীর্তি দিয়ে সমৃদ্ধ ও অভ্যস্ত করেছেন তাঁদের মনন, রুচি ;এবং পরবর্তীতে রমাপদ চৌধুরী, তারাপদ রায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু,শংকর, বুদ্ধদেব গুহ, বাণী বসু পেরিয়ে কিঞ্চিৎ সুচিত্রা ভট্টাচার্য, তিলোত্তমা মজুমদার ছুঁয়ে বিগত এক,দেড় দশক যাবত নতুন যুগের লেখক কৃত সাহিত্যকর্মে আর তেমন আগ্রহী হন না, এষা দে-র গল্পগুলির গ্রহণীয়তা সেই পাঠকের কাছে দীর্ঘ খরার পরে বৃষ্টিধারার সমান।
গল্পে যাবার আগে এষা দে’র সম্বন্ধে কিছু কথা বলা বাঞ্ছনীয়। ‘যুগান্তর’ পত্রিকার সম্পাদক স্বনামধন্য শ্রী বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা তিনি।১৯৩৯ এ জন্ম।ফলে ভারতের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে, দেশভাগ,বাংলার রাজিনৈতিক পালাবদল, উত্থান পতন খুব কাছ থেকে এবং বিশ্লেষণী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন তিনি। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রী এষা দে অত্যন্ত আগ্রাসী পাঠিকা ছিলেন ইংরেজি সাহিত্য ও থ্রিলারের। তাঁর নিজের কথাতেই, ‘ যে বইটা লন্ডনে বেরোতো,তার ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে সেই বই আমরা কলেজ স্ট্রীট থেকে পেয়ে যেতাম। স্নাতকোত্তর এবং গবেষণাত্তোর পর্বে তিনি কটকের……… কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপিকা। IAS স্বামী ওড়িশা সরকারের চিফ সেক্রেটারী। ফলে ইংরেজি ও ফরাসীর পাশাপাশি ওড়িয়া ভাষাটাও তিনি বলতে পারেন প্রায় মাতৃভাষার মতোই।
এ হেন একজন মানুষ যখন কলম ধরেন,তখন তাঁর গল্পে নির্দিষ্ট পরিসরের নিটোল বাঙালী জীবনের বাইরের আর কিছু যে উঠে আসবে – এটাই স্বভাবিক। কিন্তু গল্পের পাতাগুলি ওল্টাতে ওল্টাতে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশী বৈচিত্র্যে ভ’রিয়ে তিনি শুধু ‘মুগ্ধ’ করেন?, ’ ‘চমৎকৃত ‘ করেন?, ‘বিস্মিত’ করেন??
না।
বরং তাঁর বিষয়ের বৈচিত্র্যে, পটভূমির ভিন্নতর আঙ্গিক ও তৎপ্রসূত জটিলতার চিত্রণে, সমাজের অতি উচ্চস্তর থেকে এক্কেবারে ধুলিমলিন জীবনপ্রণালী বর্ণনার নিপুণতায়, সর্বোপরি বাঙালীর অভ্যস্ত পঠনের বাইরে তাকে বারবার টেনে নিয়ে গিয়ে ফেলা এবং নিজের মুখোমুখি দাঁড় করানোয় তিনি পাঠককে নাস্তানাবুদ করেছেন বারবার বারবার।
কিন্তু কেন করলেন তিনি এমন?.. তাঁর কলম ত’ নিছক সুখপাঠ্য গল্প লিখেই জনপ্রিয়তার সোনালী শিখর ছুঁতেই পারত’।
কারণ একটাই, তিনি ব্যতিক্রমী। কখনোওই কোনো সাহিত্যগোষ্ঠীভুক্ত হওয়া নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত তিনি নন। নন সাহিত্যিকদের ইঁদুরদৌড়ে নিজেকে মেলাতে। তাঁর সারস্বত ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আত্মজীবন তাঁকে যা দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশী বইমেলায় কলকাতার লেখকদের বই সবসময় পিছনের সারিতে রাখা হচ্ছে দেখার পরেও সেই বইমেলা নিউএ অন্যান্যদের মত তাঁর নিজের উৎসাহ ও আবেগের সমালোচনা করতেও তাঁর বিন্দুমাত্র দ্বিধা আসে না।
আসি এবার বইয়ের কথায়,গল্পের কথায়। কর্পোরেট, ম্যানেজমেন্ট,ব্যূরোক্রাসি,অ্যাডমিনস্ট্রেশন, অ্যাকাডেমিক্স এবং মিডিয়া জগৎ – অত্যন্ত কাছ থেকে দেখার সুবাদে প্রতিটি ক্ষেত্রকে যে তাঁর পটভূমি হিসেবে ব্যাবহার ক’রেছেন বা আমাদের সঙ্গে পরিচিতি করিয়েছেন, তাইই নয়, তাঁর আলো ফেলার মুন্সিয়ানায় এই ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের এমন এক একটি দুর্গম কোণ দৃশ্যমান হয়েছে,যেন ম’নে হয়েছে Zoom ক’রে পাঠককে সেইখানে ঘনীভুত হ’য়ে থাকা অচেনাকে তিনি অঙ্গুলিনির্দেশ করছেন।
তাঁর বইয়ের শুরুতেই লেখার সংক্ষিপ্ত ভূমিকায় লেখা আছে তাঁর রচনার বিপুল ভৌগোলিক পরিসরের কথা। আসলে গোটা ভারতবর্ষটাই তাঁর ক্যানভাস,যে ক্যানভাসে তিনি ছবি আঁকেন। সে ছবি আপাতদৃষ্টিতে দেখলে ‘নান্দনিক’ লাগে,’চমৎকার লাগে’। কিন্তু ভিন্নতর দৃষ্টি নিয়ে যে পাঠক গল্পগুলি পড়তে বসবেন, তিনি দেখবেন, এই সবের মধ্যে লেখিকার ফোকাস একটাই,তা হল ‘বাঙালী’। ‘বৃত্ত’ গল্পের কথাই যদি ধরি। ওড়িশা সরকারের এক উচ্চপদস্থ আমলা – কৃষ্ণকান্ত। তাঁকে ঘিরে যে আমলাতান্ত্রিক ও ব্যাবিসায়িক গোষ্ঠীর ক্রমাগত ওঠাবসা তার ছোট্ট এক সন্ধের বিবরণ দিতে গিয়েই লেখিকা দেখিয়ে দেন প্রতিটা প্রদেশের সঙ্গে অন্যটির কি ভয়ংকর নিঃশব্দ রেষারেষি। সামান্য সৌজন্য আলাপে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের ফাঁকফোকরে ভ’রে দেওয়া শ্লেষ,অবিশ্বাস আর পরষ্পর পরষ্পরকে মেপে নেবার তীব্র প্রতিযোগিতা। ওড়িশার সঙ্গে বিহারের,বিহারের সঙ্গে পঞ্জাবের, আর বাংলা ত’ রয়েইছে। লেখিকা বার বার আমাদের বিশ্বাসের, ভাবনার অভ্যস্ত ‘norm’ গুলিকে বিদ্ধ ক’রে যান। আইডেন্টিটি, ধর্ম,ভাষা ওপর বিদেশী অত্যাচার বা আগ্রাসনের স্মৃতি আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেঁধে আছে। লেখিকা দেখান, কেমন ক’রে নিদারুণ কষ্টে থাকা একদল বাঙালী উদ্বাস্তুর সামান্য ক্ষোভপ্রকাশের প্রতিশোধ নিতে আমলা কৃষ্ণকান্ত অফিসে এসেই সবার আগে তাদের মাতৃভাষায় সাক্ষরতার সুযোগ ভিক্ষার আবেদনপত্রগুলি কুটি কুটি ক’রে ছিঁড়ে ফেলে দেন।
আবার সেই একই ফ্রেমে ধরা পড়ে ওড়িয়াদের নিজেদের মধ্যে ‘মিশ্র’ বনাম ‘মোহান্তি’,আর ‘পট্টনায়ক’ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ বনাম কায়স্থ,করণদের বিভাজন। এমনকি রাজ্যের কোন প্রান্তের কে বাসিন্দা – বিভাজন এ নিয়েও। কিন্তু ব্যুরোক্রাসির পরিসরে গল্পের বিন্যাস ঘটালেও, শ্রীমতী এষা দে কণামাত্র পরিসরেই আবার আমাদের পরিচিত করান ওড়িশার গ্রামজীবনের কিছু রীতির সঙ্গে।গ্রামীণ মানুষজন সেখানকার সম্পন্ন কোনো মহিলাকে ‘দেই’ অর্থাৎ ‘দেবী’ ব’লে ডাকে। আর সংসারে মা বা শাশুড়ীকে ছেলে বৌ ‘বউ’ ব’লে ডাকে।
সমাজে, বিশেষত বাঙালী সমাজ ব্যাবস্থায় নামী,দামী ছেলের মান নির্ধারণ হয় চাকরী দিয়ে।আই আই টি, জয়েন্ট সবার ওপরে। তার পরেই ম্যানেজমেন্ট সেক্টর। ক্যাট,ম্যাট ইত্যাদি। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার নিজেদের সর্বস্ব এক ক’রে, সব সঞ্চয় ঢেলে পড়ায় তাদের একমাত্র ছেলেটিকে,এবং মুম্বইয়ে যখন সে চাকরি পায়, তখন বাবা মা-র এক অনুপম তৃপ্তি। ছেলে ‘এম বি এ’ ক’রে মুম্বইয়ে সেটল করেছে।কোম্পানি রেসিডেন্স দিচ্ছে’ – এই মিথের আড়ালে চলে ছেলেটির সকালে এক টুকরো পাওভাজি, দুপুরে একটা কলা আর রাতে কখানা রুটি আর ঢেঁড়শের তরকারির রোজনামচা। প্রায় বস্তিসম ঘরে শেয়ারে রাত্রিযাপন, আর অকারণে প্রোবেশন পিরিয়ড শেষ হবার মুখেই মালিকের জঘন্য দুর্ব্যবহার এবং বিদায়। এই ট্রিটমেন্ট পেতে পেতে পেতে পেতে একটি প্রেসিডেন্সি থেকে বেরোনো ইংরেজিতে সুশিক্ষিত ছেলে যখন মোটামুটি পেট ভরা খাবারের মত মাইনের একটা চাকরি পায়,সেটাকেই সে তার আল্টিমেট ভাল থাকা ধ’রে নেয়। জীবন থেকে তখন তার গভীর ভালবাসার মানুষটি হারিয়ে গেছে। বাবা মার মত নিকটাত্মীয়ের সঙ্গেও বাঁধন হ’য়েছে আলগা।
এই চরম স্বপ্নভঙ্গ, হতাশার পিছনে ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট আর ক্যাম্পাসিং থেকে চাকরি দেওয়া কোম্পানির কি নিপুণ হিসেবী খেলা চলতে থাকে, তা স্পষ্ট ক’রে দিয়েছেন লেখিকা ‘প্রবাল ভালো আছে’ গল্পে। এষা দে’র কোনো গল্পেই ভাষার অকারণ আভরণ বা মেদবাহুল্য একেবারেই নেই। ভাষাকে তিনি শক্ত কলমে নিয়ন্ত্রিত ব্যাবহার করেছেন কেবলমাত্র তাঁর ভাবনার পরিবাহী হিসেবে। কিন্তু তার মধ্যেও এমন এক একটা কাব্যছোঁয়া লাইন বেরিয়ে আসে, যা চিরকাল যেন এক সুন্দর নক্সার মত ম’নে থেকে যায়। প্রবালের সঙ্গে তার প্রেমিকার শেষ দেখার দৃশ্য তিনি বর্ণনা করেন এভাবে – ‘দুজনে বাসে ওঠে।প্রথমে প্রবালের স্টপ।নেমে ফিরে তাকায়।আধখানা খোলা কাচের জানলার মধ্যে শ্রীর মুখ।হাত নেড়ে হাসে,ঝকঝকে মুক্তোর মত দাঁত,দেখতে দেখতে যেন কান্না হয়ে যায়।’
‘শেষ বাঙালী’ গল্পের গঙ্গাপ্রসাদ চিরকাল ম’নে থেকে যাবেন। পাঠক যদি এ বইয়ের সবটুকুও ভুলে যাও,তাও গঙ্গাপ্রসাদকে ভুলবে না। মৃত্যুশয্যায় তার নিজের ভূমিচ্যুত,বাংলাচ্যুত হবার তীব্র বেদনা একদিকে আর একদিকে বাঙালী দম্পতি প্রবাল ও নীলার নিজেদের অনাগত সন্তানের নাম থেকে কি করে মজুমদার পদবীটুকু অব্দি ছেঁটে ফেলে তাকে গ্লোবাল সিটিজেন বানানো যায়,সেই নিয়ে সহাস্য আলোচনা – কি অসম্ভব বৈপরীত্যের বেদনায় ছেয়ে ফেলতে পারে, তা এ গল্প না পড়লে বোঝা যাবে না।
চ’লে আসি ‘পরগাছা’ গল্পে। কলকাতার পশ এলাকা বালিগঞ্জ ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে পরিচারিকা আরতী।তার বস্তিঘরের জীবনযাপনের প্রতিটি অনুপুঙ্খ বর্ণনা এতটাই বাস্তবসম্মত যে, এষা দেবীর কলম বিস্ময় রেখে যায়। তার ভাঙা তক্তপোশের এক পাশে প’ড়ে থাকা ‘কাঁথাকানি’ থেকে শুরু করে, জনতা স্টোভে একসঙ্গে সেদ্ধ হওয়া চাল আলু ডিমের সঙ্গে ন্যাকড়ায় মুসুর ডালের ভাগ, অনেক ধুলো,নোংরা, আগাছা থেকে বাঁচিয়ে রাখা একখানা পেয়ারা গাছ – এই আরতী যখন অসুখ, জ্বর গায়ে এক বস্ত্রে মেয়ের হাত ধ’রেই উঠে যায় তার নতুন কেনা সুভাষগ্রামের এক চিলতে জমিতে, সব কাজ ছেড়ে, নতুন জীবন বাঁঁচবে ব’লে। যে ‘ফেমিমিজম’ শব্দটি উচ্চবিত্ত সমাজের একদল নিজেদের উচ্চারণের অধিকার ব’লে ম’নে করেন,সেই ফেমিনিজমের চূড়ান্ত নিদর্শন রেখে সে তার মাতাল স্বামী আর ছেলেকে ছুঁড়ে ফেলে নতুন ঠিকানায় পা বাড়ায়।
‘বেবীকট’ বা ‘এন আর আই কারে কয়’ গল্পে যেমন একদিকে নিটোল বাঙালী পরিসরে চিরাচরিত শাশুড়ীকে তাঁর বৌমার সঙ্গে টক্কর নেবার সূক্ষ প্রচেষ্টায় লেখিকা ধ’রে ফেলেন, আর একদিকে সারাক্ষণ এন আর আই দের কারণে সর্বত্র নানান অসুবিধার সম্মুখীন হ’তে হ’তে তিতিবিরক্ত হ’য়ে, তাদের শাপশাপান্ত করতে থাকা প্রৌঢ়া যে মূহুর্তে বন্ধুর চিঠি খুলে দেখেন তার বিদেশে বসবাসকারী ছেলের বিয়ের জন্য প্রৌঢ়ার মেয়েকে চেয়ে চিঠি পাঠান, আনন্দে আত্মহারা প্রৌঢ়া মেয়েকে ‘বিদেশে থাকে’ বলতে পারার আনন্দের মাঝে দ্বিচারিতার এক স্তম্ভিত নিদর্শন রেখে যান।
‘ল্যাপিস লাজুলি’ গল্পের বিরজু। বার্ধক্যের সীমায় গিয়েও,অনটনে প’ড়েও বেচতে পারেন না বাপ দাদার আমলের নীলাভ মণিগুলি। বহু দিন পর নবপরিণীত এক বাঙালী দম্পতিকে স্বেচ্ছায় পাথরগুলো বিক্রি করেন যখন তিনি দেখতে পান, নীলাম্বরী পরিহিতা মেয়েটিকে নীল মণিতে সাজাতে মরিয়া তার সঙ্গী পুরুষটি। সারাজীবন তিনি যা পান নি, তাঁর ক্রেতা পুরুষটি সেই নীলমণি পরাবার মত কাউকে পেয়েছে যে। আপাদমস্তক রাজস্থানি সেটিং এ গ’ড়ে ওঠা এই গল্পে যে শেষমেশ বাঙালীকেই তিনি রত্নগুলি বিক্রি করতে রাজী হন,তার মধ্য দিয়ে লেখিকার খুব সূক্ষ জাত্যাভিমান কোথাও ফুটে ওঠে কি!!
‘পিঞ্জর’ গল্পে আবার পাঞ্জাবের পটভূমিতে এক ধনী দম্পতির শীতল দাম্পত্যের ছবি, আবার সংকলনের প্রথম গল্পটিতেই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের এক্ পুরুষের সফল ধনী আমলা হ’য়ে ওঠা জীবনের ঠিক নীচেই লুকিয়ে থাকা গৃহযাপনের এক অদ্ভুত আঁধারচিত্র।
সব গল্পের আভাস এ পরিসরে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে দেশকে,বিশ্বকে নিবিড়ভাবে, নিকট থেকে দেখার বিপুলতায় এষা দে নিঃসন্দেহে তাঁর সমকালের বেস্ট সেলার অনেক লিখিয়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তাঁর গল্পগুলি পড়তে পড়তে যতবারই প্রশ্ন জেগেছে, কেন তিনি চর্চ্চিত নন, ততবারই ম’নে হয়েছে আসলে এষা দে র এই গল্পগুলি ঠিক যে সময় থেকে সাহিত্যের অঙ্গনে আসতে শুরু করেছে আজকের সিরিয়ালভোক্তা বাঙালীমানস ঠিক সেই সময় থেকেই পাঠকের জায়গায় থেকেছেন,সূতরাং তাঁরা যে চিন্তাজগত বা মস্তিষ্ককে বিশেষ বিচলিত করে এমন কিছুতে আগ্রহী হবেন না – তা বলাই বাহুল্য…
পরিশেষে একটাই কথা। আজও যদি কোথাও মননশীল বাঙালীর কোনো অস্তিত্ব থেকে থাকে,তবে এষা দে’র এই গল্প সংকলন তাঁদের কাছে অবশ্যপাঠ্য।
Comment here