সাদাকালো রঙমাখা

পরলোকে ডক্টর প্রবাসজীবন চৌধুরী –

প্রেসিডেন্সী কলেজের দর্শন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডক্টর প্রবাসজীবন চৌধুরী – এম-এ, এম-এস-সি, ডি-ফিল, পি-আর-এস কলকাতায় অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছেন। বিহারের বক্তিয়ারপুরের ডাঃ মাখনলাল চৌধুরীর জ্যেষ্ঠপুত্র ডক্টর চৌধুরী ১৯৩৯ সালে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে সসম্মানে পদার্থ বিদ্যায় এম-এস-সি ডিগ্রী লাভ করেন। পরে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ইংরাজী ও দর্শনশাস্ত্রে এম-এ ডিগ্ৰী লাভ করিয়া ডি-ফিল ও পি-আর-এস হন। শিলং কলেজে ও পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন অধ্যাপনা করার পর ডাঃ চৌধুরী শান্তিনিকেতন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিদ্যায় ও দর্শন শাস্ত্রে রীডার পদে নিযুক্ত হন।  ১৯৫৩ সালে তিনি  প্রেসিডেন্সী কলেজের দর্শন শাস্ত্রের প্রধান অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯৫৯ সালে আমেরিকার দুইটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আমন্ত্রিত হইয়া এক বছর আমেরিকায় থাকেন এবং এথেন্স নগরীতে আন্তর্জাতিক এসথেটিকস সম্মেলনে সহ-সভাপতির কার্য্য করিয়া দেশে প্রত্যাবর্ত্তন করেন। বহু দেশী ও বিদেশী পত্রিকায় তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে। বিদেশী ভাষায় লিখিত তাঁর সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন সম্বন্ধীয় বহু প্রবন্ধ ও পুস্তক সুধী-সমাজে সমাদৃত হইয়াছে। “ভারতবর্ষ” পত্রিকারও তিনি নিয়মিত লেখক ছিলেন এবং তাঁর বহু প্রবন্ধ, গল্প প্রকাশিত হইয়াছে। 

সদালাপী, সুর্দশন প্রবাসজীবন একাধারে কবি, সাহিত্যিক ও বৈজ্ঞানিক ছিলেন। তাঁর সম্বন্ধে বোষ্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বার্চ্চ বলিতেছেন – “PravasJIban was a philosopher of great ability. He developed a system of philosophy which was profound and original,” কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অধ্যাপক বার্ট বলছেন – “We thought of him also as one of the most promising philosophers, not just in India, but in the world.”

দেশের এই সুসন্তান ডক্টর প্রবাসজীবনের বিশাল সম্ভাবনাপূর্ণ জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে সুখলাল কর্ণানী হাসপাতালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ রোগে।

 

(‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকা – ১৩৬৮)

Comment here